পবিত্র নিয়তের মাধ্যমে শুরু মাহে রমজান - কক্সবাজার কন্ঠ

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শুক্রবার

বিষয় :

প্রকাশ :  ২০১৮-০৫-১৮ ০৫:১২:০৬

পবিত্র নিয়তের মাধ্যমে শুরু মাহে রমজান

মহান আল্লাহপাকের বিশেষ কৃপায় পবিত্র মাহে রমজানে প্রবেশ করার সৌভাগ্য আমরা লাভ করছি, আলহামদুলিল্লাহ। আল্লাহ্ রাব্বুল আলামিনের কাছে এ দোয়াই থাকবে, আমরা যেন সুস্থতার সঙ্গে পবিত্র এই দিনগুলো অনেক বেশি ইবাদত আর পুণ্যকর্মের মাধ্যমে অতিবাহিত করতে পারি। আমরা জানি, ইসলামের সব কর্মের ভিত্তি নিয়তের ওপর রাখা হয়েছে। নিয়ত অনুযায়ী প্রত্যেককে তার কর্মফল প্রদান করা হয়। যেহেতু আল্লাহতাআলা প্রত্যেকের অন্তরের খবর জানেন, তাই কে কোন নিয়তে পুণ্য করেন সে অনুযায়ী তাকে পুরস্কার দেওয়া হয়। মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘আল আ’মালু বিননিয়াত’, অর্থাৎ মানুষের কর্মের ফল নিয়ত ও ইচ্ছার ওপর হয়ে থাকে। এ জন্য ইবাদত শুরু করারও ইসলামে সঠিক নিয়ত ও নেক ইচ্ছার শর্ত রয়েছে। যখন কোনো মুসলমান কোনো বিশেষ ইবাদতের নিয়ত করে তা আদায় করে, তখন তার সেই ইবাদত প্রকৃত অর্থে আদায় হবে। রোজা সম্পর্কেও বলা হয়েছে যে, এর জন্য নিয়ত করা জরুরি। সবচেয়ে উত্তম হলো, রোজার জন্য মানুষ রাতে ঘুমানোর সময় ইচ্ছা ও নিয়ত করে ঘুমানো।এ বিষয়ে হাদিসে এসেছেÑ হজরত হুজায়ফা (রা.) বর্ণনা করেন, হজরত নবী করিম (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি ফজরের আগে রোজা রাখার নিয়ত না করে, তার রোজা রাখা পূর্ণ হয় না’ (তিরমিজি-আবওয়াবুস সাওম)। রোজার নিয়তের জন্য কোনো অর্থবোধক শব্দ পাঠ করা জরুরি নয়। নিয়ত সেই ইচ্ছারই নাম, যার জন্য সে কোনো খাদ্য ও পানীয় ছেড়ে দিচ্ছে। রোজার নিয়তের জন্য আলাদা কোনো দোয়া হাদিস শরিফ থেকে পাওয়া যায় না। তবে একটি বাক্য প্রচলিত আছে, যা পাঠ করাতে কোনো অসুবিধা নেই, তা আমরা নিয়ত হিসেবে পাঠ করতে পারি যেমনÑ ‘ওয়া বি সাওমে গাদিন নাওয়াইতু মিন শাহরি রামজানা’ অর্থাৎ কাল সকালে রমজান মাসের রোজা রাখার নিয়ত করছি। যদি নিজ ভাষায় বা শব্দেও নিয়ত করে, তবে কোনো অসুবিধা নেই। হজরত ইমাম মালেক (রহ.), হজরত ইমাম শাফী (রহ.) ও হজরত ইমাম আহমদ বিন হাম্বল (রহ.)-এর মতে রমজানের রোজার নিয়ত রাতে করা জরুরি। কিন্তু ইমাম আবু হানিফা (রহ.), সুফিয়ান সাওরি (রহ.), ইমাম আবু ইউসুফ ও ইমাম মোহাম্মদ (রহ.)-এর মতে, রমজান মাসে রাতে রোজার নিয়ত জরুরি নয়। কেননা রোজার নিয়ত করার উদ্দেশ্য এই যে, যেন নির্ধারণ করা যায়, কোন রোজা, নফল না ফরজ। আর রমজানের রোজা রাখার হুকুম দিয়ে আল্লাহতাআলা তা নির্ধারণ করে দিয়েছেন, এই জন্য রাতে তার নিয়ত করা জরুরি নয়।

ইমাম শাফি (রহ.) ও ইমাম আবু হানিফা (রহ.)-এর মতে, যদি অর্ধদিবসের আগ পর্যন্ত রমজানের রোজার নিয়ত করা হয়, তাহলেও হবে। আর ইমাম মালেক (রহ.), ইমাম আহমদ বিন হাম্বল (রহ.) ও ইসহাক বলেন, যদি রমজানের প্রথম রাতে সব রমজান মাসের জন্য নিয়ত করা হয়, তবে যথেষ্ট। কেননা সব রোজার নিয়ত ও একটি রোজার নিয়ত একই কথা। আমাদের উচিত হবে, রমজানের রোজা রাখার আগে নিয়ত করে নেওয়া আর আল্লাহতাআলার কাছে এই প্রার্থনা করা যে, হে আল্লাহ! আগামীকাল তোমার সন্তুষ্টির জন্য আমি রোজা রাখব, তুমি আমাকে সুস্থতার সঙ্গে রোজা রাখার তৌফিক দান করুন।আল্লাহতাআলা আমাদের সবাইকে সুস্থতার সঙ্গে রমজানের দিনগুলো ইবাদত-বন্দেগির মাঝে কাটানো সৌভাগ্য দান করুন, আমিন।মাওলানা এমএম আহমদ : ইসলামি গবেষক…

আরো সংবাদ