নিউজ ডেস্ক:জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় সাজাপ্রাপ্ত বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানসহ বিভাগীয় শহরে সমাবেশ করবে বিএনপি নেতৃত্বে থাকা ২০ দলীয় জোট। আজ রোববার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে জোটের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জোট নেতারা জানিয়েছেন।
একই সঙ্গে জোটের শীর্ষ নেত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী সরকারের বাইরের রাজনৈতিক দলগুলো সঙ্গে জাতীয় ঐক্য সৃষ্টির লক্ষ্যে জোট সম্প্রসারণ করে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন এবং জোটে জামায়াত থাকার কারণে যেসব দল না আসবে ওই গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে যুগপৎ আন্দোলনের করারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এজন্য জোটের পক্ষ থেকে বিএনপিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এই বৈঠকে,টেলিফোনে জোট নেতাদের উদ্দেশে বক্তব্য দিয়েছেন—বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ঐক্যবদ্ধভাবে অহিংস আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার জন্য জোট নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বলে জোট নেতারা জানান। এদিকে,আজ খালেদা জিয়ার সাজা দেওয়ার প্রতিবাদ ও মুক্তির দাবিতে রাজধানী ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১ টা পর্যন্ত মানববন্ধন কর্মসূচি করবে। এ ছাড়া ঢাকার স্থান ঠিক না হলেও আগামী মঙ্গলবার একঘণ্টা অবস্থান এবং বুধবার সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত আট ঘণ্টা করবে বিএনপি। জেলাসমূহে সুবিধামত সময়ে ঠিক করবে স্থানীয় নেতারা। এসব কর্মসূচিতে ২০ দলীয় জোট সক্রিয়ভাবে অংশ নেওয়া সিদ্ধান্ত হয়েছে। বৈঠক শেষে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন,বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে দেশনেত্রীর মুক্তির দাবিতে বিএনপি ঘোষিত কর্মসূচিতে জোট নেতারা একাত্মতা ঘোষণা করেছেন। তারা এই সব কর্মসূচি সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করবেন। একই সঙ্গে ভবিষ্যতে ২০ দলীয় জোটের কর্মসূচি গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়েছে। জোটের একাধিক শীর্ষ নেতা জানান, বুধবারের কর্মসূচি শেষ করে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।মির্জা ফখরুল বলেন, ‘জোটের এই সভায় দেশনেত্রীর বিরুদ্ধে যে সাজা দেয়া হয়েছে এবং তাকে কারাগারে নেওয়া হয়েছে তার তীব্র নিন্দা, ক্ষোভ ও প্রতিবাদ জানিয়েছে। অবিলম্বে এই মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে তার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিও জানিয়েছেন তারা। দেশনেত্রীই হচ্ছে ২০ দলীয় জোটের নেত্রী। এই ব্যাপারে কোনো সন্দেহ থাকার অবকাশ নেই। আমি জোটের সমন্বয়ক হিসেবে কাজ করছি।’ মির্জা ফখরুল জানান, ‘বৈঠকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডন থেকে টেলিফোনে জোট নেতাদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখেন। তার (তারেক রহমান) বক্তব্যে যেটা এসেছে,তিনি জনগণের একটি জোট প্লাটফর্ম তৈরি করবার কথা বলেছেন। দেশনেত্রী সর্বশেষ যে সংবাদ সম্মেলন করেছিলেন তাতে জাতীয় ঐক্য তৈরি করবার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। সেটা ২০ দলীয় জোটের নেতারা সমর্থন করেছেন।’ মির্জা ফখরুল বলেন, ‘জোটের এই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে যে, এই জোটের ঐক্যকে আরো প্রসারিত করবার জন্যে অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কথা বলবে।’ ২০ দলীয় জোটের এই বৈঠকে সভাপতিত্ব করে জোটের সমন্বয়ক মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান,আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এনামুল হক চৌধুরী। জোটের শরিকদের মধ্যে ছিলেন বিজেপির আন্দালিব রহমান পার্থ, জামায়াতের ইসলামী আবদুল হালিম, জাতীয় পার্টি(কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, ইসলামী ঐক্যজোটের অ্যাডভোকেট এম এ রকীব, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) রেদোয়ান আহমেদ, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব শাহাদত হোসেন সেলিম, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) অধ্যাপিকা রেহানা প্রধান, খেলাফত মজলিশের আহমেদ আবদুল কাদের, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির(এনডিপি) খন্দকার গোলাম মূর্তজা, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির(এনপিপি) ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, ন্যাপ-ভাসানী আজহারুল ইসলাম, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের এএইচএম কামরুজ্জামান খান, বাংলাদেশ ন্যাপের জেবেল রহমান গানি, পিপলস লীগের গরীবে নেওয়াজ, লেবার পার্টির একাংশের মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, অপর অংশের হামদুল্লাহ আল মেহেদি, জমিয়তে উলামা ইসলামের মুফতি মহিউদ্দিন ইকরাম, মাওলানা শাহিনুর পাশা, মাওলানা রেজাউল করীম, সাম্যবাদী দলের সাঈদ আহমেদ, ইসলামিক পার্টির সাখাওয়াত হোসেন চৌধুরী, ডেমোক্রেটিক লীগ(ডিএল) সাইফুদ্দিন মনি উপস্থিত ছিলেন। সর্বশেষ ২০ দলীয় জোটের বৈঠক হয় গত ২৮ জানুয়ারি সেখানে খালেদা জিয়া সভাপতিত্বে করেছিলেন।-আমাদের সময়..