তরুণীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ : ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা - কক্সবাজার কন্ঠ

শনিবার, ১৮ মে ২০২৪ ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

প্রকাশ :  ২০২২-০৩-১৫ ১০:১৩:৩৯

তরুণীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ : ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা

মহেশখালীতে গৃহবধু ধর্ষণের অভিযোগে যুবলীগ নেতাসহ ২ জনের বিরুদ্ধে মামলা

নিজস্ব  প্রতিবেদক  :  কক্সবাজারে আইনজীবীর কার্যালয়ের সামনে থেকে এক তরুণীকে তুলে নিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। গতকাল সোমবার (১৪ মার্চ) বেলা দুইটার দিকে ওই তরুণীকে তুলে নিয়ে দলবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন। এ ঘটনায় গতকাল রাতে ওই তরুণী চারজনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও পাঁচজনকে আসামি করে কক্সবাজার সদর থানায় এজাহার দায়ের করেছেন। কক্সবাজার সদর থানার ওসি আপারেশন নাছির উদ্দিন কক্সবাজার কন্ঠকে জানান, ঘটনাটি আইনগত প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

ওই তরুণীর অভিযোগ, গতকাল দুপুরের ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা মোরশেদসহ অন্য অপরাধীদের নিয়ন্ত্রণ করেন। এ ঘটনায় থানা– পুলিশের ভূমিকা রহস্যময়। তরুণী বলেন, তিনি এজাহারে চার আসামির নাম উল্লেখ করেছেন। তাঁরা হলেন কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলার ফিরোজ আহমদ, রাসেল উদ্দিন, নুরুল ইসলাম ও মো. শরীফ।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ফিরোজ ও শরীফ বিভিন্ন সময় তাঁকে উত্ত্যক্ত করে বিভিন্ন কু-প্রস্তাব দিতেন। তিনি ওই প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তাঁকে ধর্ষণ ও হত্যার হুমকিও দেয়া হয়েছে। সর্বশেষ গতকাল দুপুরে তিনি কক্সবাজার আদালত এলাকায় এক আইনজীবীর কার্যালয় থেকে বের হলে আসামিরা তাঁকে ঘিরে ফেলেন। একপর্যায়ে ফিরোজ ও শরীফ তাঁকে ধরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় বাধা দিলে অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজন এসে তাঁর হাত-পা ও মুখ চেপে ধরে একটি মাইক্রোবাসে তুলে নেন। এরপর ফিরোজ ওই তরুণীর স্বর্ণালংকার ও টাকা ছিনিয়ে নেন।

এরপর মাইক্রোবাসটি শহরের বাহারছড়া এলাকায় ফিরোজের আত্মীয় ফজল কাদেরের বাসায় যায়। এ সময় মাইক্রোবাস থেকে নামিয়ে ওই বাড়ির একটি কক্ষে ওই তরুণীকে আটকে রেখে ফিরোজ ও শরীফ তাঁকে ধর্ষণ করেন। পরে একইভাবে নুরুল ইসলামও তাঁকে ধর্ষণ করে তাঁর মুঠোফোন ও টাকা নিয়ে চলে যান। কিছুক্ষণ পর রাসেল উদ্দিন ওই কক্ষে এসে নিজেকে পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় দেন। ধর্ষণের বিষয়টি কাউকে জানালে মানব পাচার মামলায় চালান করে দেয়ার হুমকি দেন রাসেল। একপর্যায়ে রাসেলও ওই তরুণীকে ধর্ষণ করেন।

দলবদ্ধ ধর্ষণের কারণে একপর্যায়ে ওই তরুণী জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। এরপর রাসেল ও শরীফ ওই তরুণীকে টেনে হিঁচড়ে বাড়ির বাইরে নিয়ে আসেন। এ দৃশ্য দেখে রাস্তায় থাকা এক ব্যক্তি তাৎক্ষণিকভাবে জরুরি সেবা নম্বরে (৯৯৯) কল দিলে আসামিরা পালিয়ে যান। পরে পুলিশ এসে ওই তরুণীকে উদ্ধার করে।

ওই তরুণী বলেন, গত বছর বর্ষাকালে রাতে তাঁর বাড়িতে দুর্বৃত্তরা হামলা চালায়। এ সময় ধারালো অস্ত্র দিয়ে দুর্বৃত্তরা তাঁর শরীরের বিভিন্ন অংশ জখম করেন। এ ঘটনায় তিনি মামলা দায়ের করলে ডাকাত মোরশেদ নামের এক ব্যক্তি আত্মসমর্পণ করেন। গেল ১৫ মার্চ ওই মামলার ধার্য তারিখ ছিলো। ওই মামলায় ন্যায়বিচার পেতে করণীয় নির্ধারণে আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শ করতে গতকাল দুপুরে তিনি আদালত এলাকায় গিয়েছিলেন। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা মোরশেদসহ অন্য অপরাধীদের নিয়ন্ত্রণ করেন বলে তিনি দাবি করেন।
কক্সবাজার সদর থানার ওসি শেখ মুনীর উল গীয়াস জানান, ঘটনাটি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

উল্লেখ্য, তরুণীকে সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণের ঘটনায় উল্লেখিত রাসেল উদ্দিনের বিরুদ্ধে সম্প্রতি পর্যটক নারীকে গণধর্ষণের ঘটনায়ও জড়িত ছিলো। পরে আইনশৃংখলা বাহিনীর সাড়াশি অভিযানে তিনি অসুস্থ রোগি সেজে গা ঢাকা দেন। স্থানীয় একাধিক সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তার বিরদ্ধে মাদকসহ পর্যটন শহরের সরকারি জমি দখলের অভিযোগ রয়েছে।

আরো সংবাদ