স্বর্ণেরবার লুট নিয়ে উখিয়ায় তোলপাড় - কক্সবাজার কন্ঠ

শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

শুক্রবার

প্রকাশ :  ২০২১-০৭-০৮ ০৬:০৪:০৭

স্বর্ণেরবার লুট নিয়ে উখিয়ায় তোলপাড়

আবারও স্বর্ণের দাম বেড়ে রেকর্ড

উখিয়া প্রতিনিধি : কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার পালংখালীতে ২৭টি স্বর্ণেরবার লুটের ঘটনা ঘটেছে। এসব স্বর্ণের বাজারমূল্য প্রায় ৩ কোটি টাকা। স্বর্ণ লুটের ঘটনায় ক্ষমতাসীন দলের একজন ডজন নেতাকর্মী জড়িত বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। ঘটনা দামাচাপা দিতে কয়েক লাখ টাকার মিশন নিয়ে তারা মাঠে নেমেছে। এ ঘটনায় গত কয়দিন ধরে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে এলাকাজুড়ে। ইতিমধ্যে স্বর্ণেরবার লুটেরা গা ঢাকা দিয়েছে বলে একটি দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। গত ২১ জুন বিকাল পাঁচটার দিকে কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের পালংখালী গোলামবারীর রাস্তার মাথায় এ ঘটনা ঘটে।
জানাগেছে, টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং কাটাখালী এলাকার শীর্ষ ইয়াবা ও স্বর্ণ চোরাচালানকারী জনৈক কায়সার দীর্ঘদিন ধরে সীমান্তর ইয়াবা ও স্বর্ণ চোরাচালান নিয়ন্ত্রণ করে আসছে। লুট হওয়া স্বর্ণের মালিকও উক্ত কায়সার বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। এছাড়াও এলাকায় সে ইয়াবা কায়সার নামে পরিচিত।
অনুসন্ধানে জানাগেছে, মায়ানমারের বাসিন্দা জনৈক কালা আহমদের সাথে ইয়াবা কায়সারের গভীর সু-সম্পর্ক। সে সুযোগকে কাজে লাগিয়ে সীমান্তের ওপার মিয়ানমার থেকে বিপুল পরিমাণ স্বর্ণেরবার নিয়ে আসে কায়সার। পাচার করে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন বিভাগ ও জেলা শহরগুলোতে। তাছাড়াও রোহিঙ্গা ক্যাম্প কেন্দ্রিক স্বর্ণ চোরাচালান ব্যবসা সে নিয়ন্ত্রণ করে আসছে।

গত ২১ জুন বিকালে স্বর্ণের একটি বড় চালান কক্সবাজারের উদ্দেশ্য নিয়ে যাওয়ার সময় উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি পশ্চিম পালংখালী এলাকার বাসিন্দা সাবেক বিএনপি নেতা (নব্য আওয়ামী লীগ নেতা) আব্দুল মান্নানের ছেলে মো. জুনাইদ এর নেতৃত্বে একটি গ্রæপ ২৭টি স্বর্ণেরবার লুট করে নিয়ে যায়।
এসব স্বর্ণেরবার লুটের ঘটনায় যাদের নাম উঠে এসেছে তারা হলেন, উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের পালংখালী বাজার এলাকার কালু ড্রাইভার ছেলে আলম শাহ, পশ্চিম পালংখালী এলাকার আজিম উদ্দিনের ছেলে কাশেম আলী, আইয়ুব ইসলামের ছেলে নুরুল ইসলাম, ও নলবনিয়া এলাকার মরহুম সিরাজুল ইসলাম (মেম্বার) এর ছেলে একাধিক মাদক ও অস্ত্র মামলার আসামী ফয়েজুল ইসলাম।
অভিযুক্ত জুনাইদের কাছে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটি আমার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা ষড়যন্ত্র করছে। আসন্ন সম্মেলনে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতির প্রার্থী হওয়ার পর থেকে আমার বিরুদ্ধে একটি মহল ষড়যন্ত্র করে আসছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক ইউপি সদস্য বলেন, ঘটনাটি সম্পূর্ণ সত্য। ক্ষমতাসীন দলের এক নেতার ইন্ধনে স্বর্ণেরবার গুলো লুট করা হয়েছে। স্বর্ণেরবার লুটের ঘটনা ব্যাপক তোলপাট সৃষ্টি হয়েছে।
যুবলীগ নেতা জাহেদ আলম বলেন, সীমান্তের ওপার থেকে আসা স্বর্ণ ও ইয়াবা লুটের ঘটনা কোনো নতুন বিষয় নয়। এরকম অসংখ্য ঘটনার সাক্ষী আমরা। একটি ক্ষমতাশালী গ্রæপ এর সাথে জড়িত এবং নিয়ন্ত্রণ করছে।
আওয়ামী লীগ নেতা শাহাদত হোসেন জুয়েলের কাছে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, স্বর্ণেরবার লুটকারীদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে আইনের আওতায় আনা জরুরি হয়ে পড়েছে। এ ঘটনায় আইন শৃঙ্খলার অবনতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।
পালংখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি এম. এ মঞ্জুর স্বর্ণেরবার লুটকারীদের খোঁজে বের করে আইনের আওতায় আনার জন্য আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আহব্বান জানান ।
কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আলী আহমদ বলেন, আপনারা ব্যাপক খোঁজ খবর নেন। কারা এ ঘটনায় জড়িত। যারা জড়িত তাদের খোঁজে বের করার দাবী জানান তিনি।
উখিয়া থানার ওসি আহমেদ সনজুর মোরশেদের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ ধরনের খবর আমি শুনেনি, কেউ থানায়ও অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উখিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিজাম উদ্দিন আহমেদ এর কাছে বিষয়টি অবগত করলে তিনি বলেন, স্বর্ণেরবার লুটের ঘটনাটি আমিও লোকেমুখে শুনেছি।

আরো সংবাদ