মায়ানমারে সংঘাত : আবারও কাঁপছে বাংলাদেশের সীমান্ত - কক্সবাজার কন্ঠ

রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪ ১৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

প্রকাশ :  ২০২৪-০২-১৪ ০৪:২৮:৫২

মায়ানমারে সংঘাত : আবারও কাঁপছে বাংলাদেশের সীমান্ত

সীমান্তের ওপারে আবারও ভারী গোলাবর্ষনের শব্দ

নিজস্ব প্রতিবেদক :  মায়ানমারের রাখাইন প্রদেশে আবারও সংঘর্ষের ব্যাপকতা বেড়েছে। মনে করা হচ্ছে, রাখাইন রাজ্যের জাতিগত সশস্ত্র বিদ্রোহীদের সঙ্গে দেশটির সরকারি বাহিনীর যুদ্ধ চলছে। এতে কখনও গোলাগুলির বিকট শব্দ, আবার কখন মর্টারশেল এসে পড়ে এরমধ্যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় দিন কাটছে সীমান্ত এলাকার মানুষের।

আজ বুধবার (১৪ ফেব্রæয়ারি) ভোরে ঘুমধুম ইউনিয়নের বাইশফাঁড়ি সীমান্তে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ শোনা গেছে। এর আগে মঙ্গলবারও প্রচÐ বিস্ফোরণের শব্দে সীমান্ত এলাকা থেমে থেমে কেঁপে ওঠে।

স্থানীয়রা জানান, সোমবার (১২ ফেব্রæয়ারি) দিনভর হোয়াইক্যংয়ের লম্বাবিল ও উনচিপ্রাং সীমান্তের নাফ নদীর ওপারে থেমে থেমে এবং মধ্যরাতে ঘুমধুম ইউনিয়নের বাইশফাঁড়ি সীমান্তে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ শোনা গেছে। কখনও বিস্ফোরণের বিকট শব্দ; কখনও সীমান্তের এপারে নিজ বসতঘরে গুলি ও মর্টার শেল এসে পড়ছে। এ নিয়ে তারা আতঙ্কে রয়েছেন। সেই সঙ্গে মায়ানমার থেকে পালিয়ে আসা সরকারি বাহিনী কিংবা অস্ত্রধারী রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশও তাদের আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, গোলাগুলির শব্দ শোনা গেছে। সীমান্ত এলাকায় যেতে নিষেধ করে দেয়া হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনায় সীমান্ত এলাকায় না যেতে বিজিবির পক্ষ থেকে মাইকিং করা হয়েছে। তারা বলছেন, তারা যেতে পারছেন না ক্ষেত খামারে। বন্ধ আছে গরু-ছাগল চরানো।

সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার রেজাউল করিম জানান, টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ সীমান্তের নাফ নদীর ওপারে ভোর থেকে সকাল ৭টা প্রচÐ গোলাগুলির শব্দ পাওয়া গেছে।

রাখাইনে টানা ১৫ দিনের এই অস্থিরতার কারণে উদ্বেগ জানিয়ে টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার জালাল আহমদ বলেন, এলাকাবাসীর মনে যেন স্বস্তি নেই। থেমে থেমেই গোলাগুলি আর বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যাচ্ছে। তিনি বলেন, উদ্বেগ বা ভয়ের কারণ হলো না জানি কখন এপারে গুলি বা মর্টার শেল এসে পড়ে। তিনি সীমান্ত এলাকার মানুষকে সতর্ক থাকার আহ্বানও জানান।

হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মৌলভী নুর আহমদ আনোয়ারি জানান, নাফ নদীর ওপারে বিস্ফোরণের শব্দ গেল সোমবারের তুলনায় মঙ্গলবার ভোর থেকে বেড়েছে। এতে এপারে গুলি-মর্টার শেল এসে পড়ার আশঙ্কার পাশাপাশি রোহিঙ্গাসহ অন্যদের অনুপ্রবেশের ঝুঁকি বেড়েছে।

ঘুমধুম ইউনিয়নের মহিলা মেম্বার খালেদা বেগম জানান, গোলাগুলি থেমে থেমে চলছে। তারপরও গেলেও আতংক থামেনি এ সীমান্তে। খালে-বিলে লাশের গন্ধ। তবুও কিছু মানুষ বাড়ি ফিরেছে পেটের তাগিদে।

গ্রাম পুলিশ আবদুল জাব্বার বলেন, গোলাগুলি নিয়ে মানুষ দু:চিন্তায় রয়েছে। যাদের পেটে ভাত নেই মাঠে কাজ নেই। গরীবরা অসহায়।
ঘুমধুম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, সীমান্তের ওপারে মায়ানমারের ঢেঁকিবনিয়া এলাকা থেকে কালো ধোঁয়া দেখা যাচ্ছে। আবার কখনও রাতে গুলি বা মর্টার শেলের শব্দ শোনা যাচ্ছে।

এই পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকানোসহ সীমান্তে টহল জোরদার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন টেকনাফ-২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দীন আহমেদ।

তিনি বলেন, নাফনদী অতিক্রম করে মায়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিকদের পাশাপাশি কোনো দুষ্কৃতকারী যাতে টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশ করতে না পারে, সেজন্য অতিরিক্ত বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।

আরো সংবাদ